ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ভালুকায় পাঁচ বছরের শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল মোজাম্মেল বাবু ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ নতুন মামলায় গ্রেফতার উগ্র জাতীয়তাবাদ বড় অর্জনের পথে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে-শিক্ষা উপদেষ্টা নাসির-তামিমার মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, ২৮ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থন বাংলাদেশ-পাকিস্তান রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের বৈঠক শোক সংবাদ ছয় দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ২০ কিশোর বাংলাদেশিকে মিয়ানমার থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সাজা শেষেও কারাগারে ১৫৪ বিদেশি বন্দি অবরোধ বৃষ্টি ও যানজটে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি কুয়েটের সাবেক ভিসিসহ ১৫ জনের নামে আদালতের নির্দেশে ২ মামলা সেই আলোচিত কর কর্মকর্তাকে পুনর্নিয়োগ ডিএসসিসি’র নতুন দল নিয়ে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সংলাপে বসবে-ইসি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় শিগগিরিই বাস্তবায়ন হবে -প্রধান বিচারপতি জাতি তাকিয়ে আছে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে-ড. ইউনূস সুস্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ না থাকায় অসন্তুষ্ট বিএনপি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে না ইসরায়েলের লালমাইয়ে নিখোঁজ শিশুর মাথার খুলি হাড় উদ্ধার নারী হত্যায় স্বামীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড স্বাস্থ্যের সেই গাড়িচালকের ৫, স্ত্রীর ৩ বছর দণ্ড

নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডিমের বাজার

  • আপলোড সময় : ০৮-০৬-২০২৪ ১১:১৯:৩৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৬-২০২৪ ১১:৩৩:১৪ অপরাহ্ন
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডিমের বাজার
দেশে গত কয়েক বছর ধরে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে দেখা গেছে। গত দুই বছর ধরেই জুলাই-আগস্টে ডিমের দামে প্রবণতা দেখা গেছে। ২০২২ সালে ঠিক সময়েই ডিমের ডজন প্রথমবারের মতো ১৫০ টাকা উঠেছিল। গত বছর ছিল ১৫৫ টাকা। তবে এবার একটু আগেভাগেই ডিমের দামে নতুন রেকর্ড দেখা গেছে। মে মাসে বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম পৌঁছে ১৬০ টাকায়। প্রান্তিক খামারিরা বলছেন, ডিমের করপোরেট ব্যবসায়ী আড়তদারদের পুরনো চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠায় বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে ডিমের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এক মাস আগেও রাজধানীতে প্রতি হালি ডিম মিলতো ৪০-৪২ টাকায়। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। পাইকারি ডিম বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। ছাড়া গত মাসের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। অতি গরমে অনেকের খামারে মুরগি মারাও গেছে। আবার কেউ বলছেন, সরবরাহ কমার সুযোগে অনেকে কমিশন বাড়িয়ে নিচ্ছেন। কোম্পানিগুলোও চড়া দামে ডিম বিক্রি করছে। যদিও দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই প্রতি পিস ডিম ১০ টাকায় কিনে অভ্যস্ত ছিল। তবে গত তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে ডিমের দাম। ভোগ্যপণ্যটির বাজার হয়ে উঠেছে অস্থির। বর্তমানেও বিক্রি হচ্ছে সবোর্চ্চ দামে। দেশে এর আগে কখনো এত দামে মানুষকে ডিম কিনতে হয়নি বলে জানিয়েছেন খামারি ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ২০০৯ ২০১০ সালে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। কারণ ছিল বার্ড ফ্লু। তখন রোগের কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যায়। তাতে বড় ধরনের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়। কিন্তু তখনো দাম এতোটা বাড়েনি। গত দুই বছর ডিমের দাম যখন রেকর্ড স্পর্শ করে, তখন অবশ্য বাজারে পোলট্রি খাদ্যের দামও বেশি ছিল। এখন খাদ্যের দাম কিছুটা কমলেও ডিমের দাম কমেনি। বরং ব্যবসায়ীদের একটি অংশ পোলট্রি খাদ্যের চড়া দামকেই বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। তবে ডিম কিংবা মুরগির দাম বারবার ওঠানামার কারণ হিসেবে অনেকে বাজার সিন্ডিকেট করপোরেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করে থাকেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ১০ অর্থবছরে ডিম দুধ ৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এসময়ে মাংস ৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের ৎপাদন ছিল হাজার ১৭ কোটি, যা এখন বেড়ে হয়েছে হাজার ৩৩৮ কোটি। তবে বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে ৎপাদন বাড়ার সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ ভোক্তারা। হুটহাট দাম বাড়ার জন্য বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তদারকির অভাব, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এবং সরবরাহে অব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গ বারবারই ঘুরেফিরে সামনে আসছে। নিয়ে ভোক্তা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী খামারিরা সরকারের যথাযথ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে করেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) অভিযোগ করেছে, করপোরেট কোম্পানি আড়তদারদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশে ডিমের দাম বাড়ানো-কমানো হচ্ছে। কারণে ডিম ৎপাদনের খরচ তুলতে পারেন না প্রান্তিক খামারিরা। অথচ একচেটিয়া সিন্ডিকেটের কারণে ডিম কিনতে বাড়তি টাকা খরচ করছেন ভোক্তারা। সংগঠনটির দাবি, সারাদেশে হঠা করেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার অস্থির করা হয়। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি। কেননা তারাই সারাদেশে ডিমের বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন। সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ৎপাদনে খামারিদের খরচ সাড়ে থেকে সাড়ে ১০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা। আমরা ডিমের দাম যৌক্তিক বলে মনে করছি। এখন ডিমের বাজার স্থির থাকায় ৎপাদক (খামারি) ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন এবং ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে ডিম কিনে খেতে পারছে। কিন্তু ডিম ব্যবসায়ী সমিতি এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর কারসাজিতে মাঝে মধ্যে বাজার অস্থির হয়ে যায়। খামারিরা তখন ডিম ৎপাদন খরচও তুলতে পারেন না। তিনি বলেন, ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ আড়তদার এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর হাতে। তারা যখন ইচ্ছে দাম বাড়ান আবার যখন ইচ্ছে দাম কমান। যেমন- হঠা করেই খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ১০-২০ টাকা কমিয়ে টাকা নির্ধারণ করা হয়। আবার হঠা করেই একটা ডিমের দাম ১৩ টাকা হয়ে যায়। সুমন হাওলাদারের দাবি, প্রতিদিন মোবাইলফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে ডিমের বাড়তি বা কম দাম বাস্তবায়ন করে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। সারাদেশেই এই দামে ডিম বেচাকেনা হয়। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম কমিয়ে সেগুলো কোল্ড স্টোরেজে জমা করে। পরবর্তীসময়ে সেই ডিম আবার বাড়তি দামে বিক্রি হয়। ফলে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পোল্ট্রি ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছেন। সঙ্গে নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানি খামারিদের গলা কাটছে। এসব সমস্যা সমাধানে করপোরেট কোম্পানি, আড়তদার, পোলট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা ডিমের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবি জানান সুমন হাওলাদার। এদিকে বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে হিমাগারে ডিম সংরক্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুস শহীদ। বিষয়টি তদারকি করা হবে বলেও জানান তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ডিমের দাম কিছুটা বেশি, হিমাগারে ডিম মজুতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি তদারকি করা হবে, সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। মন্ত্রী বলেন, মনিটরিং চলছে। আমরা কিন্তু বসে নেই, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের সচিবদের যোগাযোগ হচ্ছে। আমাদের সচিবরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো জেলার ডিসিকে ফোন করে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স